দুনিয়া আখিরাতের শস্যক্ষেত্র – ব্যাখ্যা কর।
প্রতিটি মানুষের দুটি ঠিকানা, একটি ক্ষণস্থায়ী অপরটি চিরস্থায়ী-অনন্ত। দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী আর আখিরাতের
জীবন হল চিরস্থায়ী। এ পৃথিবীর মায়া ছেড়ে, সকল সম্পর্ক ছিন্ন করে একদিন সবাইকে চলে যেতে হবে পরপারে,
অনন্ত ঠিকানায়। যেখানে নেই কোনো মৃত্যু, নেই কোথাও পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে
বলেনঃ
“নিশ্চয় দুনিয়ার জীবনের তুলনা তো পানির ন্যায় ঘা আমি আকাশ থেকে নাধিল করি, অতঃপর তার সাথে
যমীনের উদ্ভিদের মিশ্রণ ঘটে, ঘা মানুষ ও চতুষ্পদ জন্ত ভোগ করে।” (সুরা ইউনুস:২৪)
অন্য এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা এভাবে বলেছেনঃ
“আর এ দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় এবং নিশ্চয় আখিরাতের নিবাসই হলো প্রকৃত
জীবন, ঘদি তারা জানত”। (সুরা আল আনকারত:৬৪)
মুলত দুনিয়া হলো পরীক্ষার স্থান। আর আখিরাত হল দুনিয়ার কর্মফলের স্থান। আমরা দুনিয়াতে ঘা কামাই করবো
তারই প্রতিদান আখিরাতে পাব। দুনিয়া পশ্চাৎপানে চলে গেছে। আর আখিরাত সন্মুখ থেকে এগিয়ে
আসছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
“দুনিয়া ঘার গুরুত্বের বিষয় হবে, আল্লাহ তার সবকিছু বিক্ষিপ্ত করে দিবেন”। (ইবনে মাজাহ, সহীহ)
তাই দুনিয়ার পেছনে দৌড়ঝাঁপ নয়, আখিরাতের পেছনেই সর্বশক্তি নিয়োগ করুন। তাহলে দুনিয়া আখিরাত
উভয়টাই পাব। আখিরাতের উপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দিলে দুনিয়াও হারাতে হবে সাথে আখিরাতও। দুনিয়া তো হলো
আখিরাতের শস্যক্ষেত্র। এ শস্যক্ষেত্রে যে ফসল ফলাবে না সে আখিরাতকে হারিয়ে ফেলবে। ইবনে উমর (রা.)
থেকে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ
“দুনিয়াতে তুমি এমনভাবে থাকো যেন তুমি অপরিচিত অথবা পথিক’। (বুখারী)
এ হদীসটির ব্যাখ্যা হল দুনিয়াতে মুমিনকে এমনভাবে থাকতে হবে, যেন সে সফর অবস্থায় আছে এবং প্রস্থানের
জন্য মাল-সামানা গোছগাছ করছে।
আখিরাতের জীবনই আসল জীবন। মানুষ আখিরাতের বাস্তব দৃশ্য যখন চক্ষে দেখবে, সে নিজেই তখন শ্বীকার
করবে, আখিরাতের জীবনই আসল জীবন। সে বলবে :
“হায়! যদি আমি কিছু আগে পাঠাতাম আমার জীবনের জন্য”। (সুরা আল ফাজর: ২৪)
সুতরাং আমাদের উচিত ভাল আমল দ্বারা দুনিয়াতেই থেকে আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করা।
Facebook Comments